কি লাভ ? আইনের লোকেরা, অপরাধীকে ধরে ? অপরাধীদের গ্রেফতার করে, অপরাধীরা আবার জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে, তাহলে লাভটা কি ? কি লাভ অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে ? লাভটা কি? যদি সেই অপরাধীরা শাস্তি না পায়, বড় অদ্ভুত এক জগত, একদিকে অপরাধীদের পোষণ করা, আবার একদিকে অপরাধীদেরকে নামমাত্র শাসন করা।

বড়ই অদ্ভুত এই জগত,এর থেকে ভালো হয় অপরাধীদেরকে স্বেচ্ছায় তাদের যা খুশি করতে দেওয়া, কেননা যদি প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি ভোগ না করতেই হয়, তাহলে এদেরকে সামরিক হেনস্তা করার অর্থ কি, গ্রেপ্তার করা নাম দেখানো মাত্র, অপরাধীদেরকে গ্রেফতার করে লাভটা কি, আজ গ্রেপ্তার হবে, আগামীকাল জামিনে বেরিয়ে আসবে, তখন যারা অপরাধের বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছিল, তাদেরকে হুমকির সম্মুখীন হতে হবে তাহলে ! অর্থাৎ এটাই বলা যায়।

অপরাধীরা অপরাধ করলে,সংবাদকর্মীরা পারলে তাদের কাছ থেকে কিছু অর্থ সহযোগিতা নিয়ে, তাদের সাথে মিলে পথ চলতে হবে, না হয় আপনাকেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে, এটাই বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের রেওয়াজ। সবাই আছে কিন্তু দেখার কিম্বা সততার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে, সত্যটাকে প্রতিষ্ঠিত এবং প্রকৃত অপরাধীদের কে গ্রেফতার করে শাস্তি প্রদান করা এমনটা বর্তমানে কম হতে দেখা যায়। এটাই হল বর্তমান প্রেক্ষাপট, ভালো করবেন, তো মরবেন, আর খারাপ দের সাথে মিল দিবেন, তাহলে অনেক আরাম আয়েশে থাকতে পারবেন।

আপনি কোনটা করবেন ? কয়েকদিন আগের কথা। আমরা চোখ বন্ধ করে, অন্ধের মত বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের ব্যাটেলিয়ান র‌্যাব বাহিনী কে। তাদের শ্রদ্ধা করি, শুধু তাই নয়, র‌্যাব যে কার্যক্রম পরিচালনা করে, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা আর আত্মবিশ্বাস থাকে, কিছুদিন আগে তাদের গ্রেপ্তারকৃত অপরাধীরা ও মুক্তি পেয়ে গেল। জামিনে বেরিয়ে এলো।

যে অপরাধের জন্য তাকে গ্রেফতার করেছিল সেই একই অপরাধ এখনো চলছে, অর্থাৎ আমরা বিশ্বাস করতে পারি। এতোটুকু যে এখানে অর্থ সবকিছু, আপনার অর্থ থাকলে কেউ আপনাকে জেলহাজতে রাখতে পারবে না, অর্থ আর ক্ষমতা দুটোই আপনার প্রয়োজন, অপরাধীরা অপরাধ করবে, ক্ষমতা এবং অর্থ দিয়ে তারা জামিনে ফিরে এসে আবার পূর্বের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

তাহলে অপরাধীদেরকে ধরে লাভ কি ? শুধু অপরাধীদেরকে, গ্রেফতার করলেই, তাদের অর্থ উপার্জনের জন্যই এই প্রক্রিয়া, এগুলো লোক দেখানো মাত্র, অবরোধ করে ধরা পড়লে মোটা অংকের টাকা দিয়ে জামিন নিয়ে ঘরে এসে, শান্তির ঘুম ঘুমিয়ে পড়ে, কোন চিন্তা নাই অথচ অনেক নিরপরাধীরা কিন্তু অপরাধ না করেও বছরের-পর-বছর শাস্তি ভোগ করে।

এমন নজিরবিহীন ঘটনা বাংলাদেশের পেক্ষাপটে নতুন নয় , অর্থাৎ র‌্যাব গ্রেপ্তারকৃত অপরাধীরা ও যদি জামিন পেতে পারে, হাতেনাতে অপরাধীকে গ্রেফতার করে, তাহলে আমরা কাদের প্রতি আস্থা রাখবো।

অর্থাৎ এর থেকে বোঝা যায়,বলা যায়, আস্থা রাখার মত বর্তমান কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। আমরা বিগত দিন থেকে দেখে জেনে আসছি যদি বাংলাদেশের র‌্যাব বাহিনী কোন অপরাধীকে ধরে, সেই অপরাধের অবশ্যই শাস্তি হবে কিন্তু এখন দেখছি উল্টোটা, তারা অপরাধীকে ধরে আর অপরাধীরা জামিন, জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে।

আবার সেই অপরাধীরা অপরাধ কার্যক্রম পুনরায় পরিচালনা করে, তাই এমন কাউকে দেখতে চাই, সে অপরাধীর সাথে আপোষ নয় বরং অপরাধীকে, অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করে কঠিন শাস্তি প্রদান করবে।

কোন জামিন নাই বরং সঙ্গে সঙ্গে শাস্তির ব্যবস্থা আর সঠিক তদন্ত, নিরপেক্ষ বিচার, নিরপক্ষ আইন ব্যবস্থা, আর স্বাধীন সার্বভৌমত্ব,  সবকিছু মিলেই আমরা নতুন কাউকে চাই, শুধু অপেক্ষায় আছি, জানি না, সেইদিন আর আসবো কিনা ! তবে অপেক্ষা করতে দোষ কোথায় !

আমি আইনের কোনো ব্যক্তিকে ছোট অথবা হীনতা করার জন্য এই লিখাটা প্রকাশ করিনি, শুধু আইনের প্রতি অটল বিশ্বাস আর তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, একটি কথাই বলতে চাই, অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় এনে যতক্ষণ অপরাধীকে শাস্তি ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা না যাবে, ততক্ষণ এদেশ থেকে অপরাধী কমবে না, অপরাধীরা নিজেও জানে,  অপরাধ করে জেলহাজতে গেলে, সেখান থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়া যাবে, তাইতো অপরাধীরা কখনো শাস্তিকে ভয় করে না।

তারা বরং চিন্তা করে, এখন থেকে একটু বেশি করে দুর্নীতি সন্ত্রাসী সহ সকল অপকর্ম কাজগুলো করতে হবে, সেখান থেকে অনেক বেশি অর্থ উপার্জন করতে হবে, কেননা একবার গ্রেফতার হলে, সেখানে অনেক অর্থ প্রয়োজন হবে, জামিন পেতে, তাইতো অপরাধীরা একবার জামিন পেয়ে পরবর্তীতে অপরাধের মাত্রা টা একটু বাড়িয়ে দেয়।

কেননা তাদের তখন টার্গেট থাকে, দ্বিগুণ অর্থ উপার্জন করতে হবে, তাই অপরাধীকে শনাক্ত করে অবশ্যই জামিন না, প্রকৃত অপরাধীকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে, শাস্তি কে বাস্তবায়ন করতে হবে, তাহলে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, আর শাস্তির প্রতি ভয়, যতক্ষণ তৈরি না হবে, ততক্ষণ অপরাধীরা অপরাধ থেকে বিরত থাকবে না, এটাই আমাদের প্রত্যাশা ।

কে এম সাইফুল ইসলাম, ধানসিঁড়ি টিভি – প্রকাশক

আপনার মতামত দিন