স্বস্তি দেশীয় শিল্পে শঙ্কা রাজস্বে – ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর ও ভ্যাটে অনেকটা ছাড় দেওয়া হয়েছে

‘আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি জাতির পিতার তুলিতে আঁকা স্বপ্ন সোনার বাংলাদেশ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাবে, এগিয়ে যাবে অনেক দূর-বহুদূর, বহুদূর…নিরন্তর’-এমন আশা জাগানিয়া উক্তির মধ্য দিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু করোনা মহামারি আর লকডাউনের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে একেবারেই নতুন কোনো উদ্যোগের কথা বলেননি।
তবে আগের প্রণোদনা প্যাকেজ পুনরুল্লেখ করেছেন। যদিও দেশের অর্থনীতি ও রাজস্ব খাতের দুর্দশার চিত্র অকপটে স্বীকার করেছেন।তাই তিনি বললেন, ‘প্রতিটি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে অসংখ্য সুযোগ এবং খুলে যায় এগিয়ে যাওয়ার জানালা।’ সে কারণে কোভিড-১৯ এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে সৃষ্ট ক্ষতের পাশাপাশি কিছু সুযোগও তৈরি হবে। যা গ্রহণে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে।
করোনা নিয়ে বছরজুড়েই হইচই ছিল স্বাস্থ্য খাত নিয়ে। অথচ এ খাতে বরাদ্দ জিডিপির সেই ১ শতাংশের মধ্যেই আছে। এ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের চাহিদা মিটবে না। অন্যদিকে আগের বরাদ্দ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য খাত পিছিয়ে আছে। এ বাস্তবতায় স্বাস্থ্য খাত বড় ধাক্কা সামলাতে পারবে কিনা-তা নিয়ে অনেকেই শঙ্কিত।
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর ও ভ্যাটে অনেকটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু পদক্ষেপ। এতে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তারা একরকম স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। এছাড়া সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আছে নারীদের জন্য সুখবরও। তবে এবারই প্রথম ঘাটতির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ঋণ গ্রহণের পরিমাণও বাড়ছে। তবে ব্যয় মেটাতে রাজস্ব আহরণ নিয়ে নানা শঙ্কা সব মহলের। মহামারির বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে সুদৃঢ় আগামীর পথে বাংলাদেশ’ শিরোনামে নতুন অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এ ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি। টাকার ওই অঙ্ক বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৭.৫ শতাংশের সমান।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের এ বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এটি দেশের ৫০তম বাজেট। এদিন সকালে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ওই বাজেট প্রস্তাবে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সংক্রমণ এড়াতে এবারো স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ির মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থায় চলছে বাজেট অধিবেশন; অধিবেশন কক্ষে মুখে মাস্ক আর হাতে গ্লাভস পরে সংসদ সদস্যদের বসতে হয়েছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশের সব মানুষকে বিনামূল্যে টিকা নিশ্চিত করা হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক টিকা সংগ্রহ করতে যত টাকা লাগুক না কেন সরকার তা প্রদান করবে। সে লক্ষ্যে এ বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ প্রতিষেধক টিকা দেওয়া কার্যক্রমের মাধ্যমে করোনা মহামারির চলমান দ্বিতীয় ঢেউয়ের অর্থনৈতিক প্রভাবও সফলভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। আমাদের অর্থনীতির প্রাণশক্তি হচ্ছে দেশের মানুষ। সঙ্গত কারণেই কোভিড-১৯ প্রভাব বিবেচনায় এবারের বাজেটেও দেশ ও জাতীর উন্নয়নের পাশাপাশি প্রধান্য পাচ্ছে দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষ-প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও তাদের জীবন-জীবিকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যেখানে চলতি অর্থবছরে জিডিপির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ১ শতাংশ, সেখানে আগামী অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির জন্য যে পরিমাণ বিনিয়োগ দরকার, তা কীভাবে হবে তা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। তবে করপোরেট কর হার ছাড়ের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানিগুলোর করপোরেট কর হার ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ, তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ থেকে নামিয়ে ২২ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং একক ব্যক্তির কোম্পানির কর হার ৩০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২৫ শতাংশ নির্ধারণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে অন্যান্য কর হার।
মধ্যবিত্তদের জন্য খুব বেশি সুখবর নেই বাজেটে। ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত সীমা একই রাখা হয়েছে। শুধু তৃতীয় লিঙ্গের ক্ষেত্রে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৫০ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক টার্নওভার কমিয়ে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। একজন ব্যক্তি করদাতার ব্যবসায়িক টার্নওভারের ওপর কর শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। বিত্তবানদের ওপর নজর রয়েছে অর্থমন্ত্রীর। অতিধনীদের ওপর সম্পদের সারচার্জ বাড়ানো হয়েছে। এ জন্য সম্পদের ওপর সারচার্জ আরোপের ৭টি ধাপ থেকে কমিয়ে ৫টি ধাপ এবং আয় না থাকলে সম্পদের ওপর কর দেয়ার ন্যূনতম বিধান বাতিল করেছেন তিনি। অর্থমন্ত্রীর ভাষায় এতে মধ্যবিত্তরা কর লাঘব পাবে। এছাড়া বাড়ি বানাতে নকশা নেওয়ার জন্য টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়াদের সমাজের মূলধারায় আনতে কিছুটা উদ্যোগ রয়েছে বাজেটে। কোনো প্রতিষ্ঠান মোট কর্মচারীর ১০ শতাংশ বা ১শ জনের বেশি তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিক নিয়োগ দিলে কর রেয়াত সুবিধার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে আগাম কর (এআইটি) এক শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ নির্ধারণ করে শিল্পোদ্যোক্তাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এলপিজি সিলিন্ডার, ফ্রিজার, রেফ্রিজারেটর ও এর কম্প্রেসারের উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া এয়ারকন্ডিশনার ও এর কম্প্রেসার, মোটর কার ও মোটর ভেহিক্যাল উৎপাদনেও বিদ্যমান সুবিধা বহাল রাখা হয়। আগামী বছর রপ্তানি খাতের প্রণোদনা ১ শতাংশ অব্যাহত রাখা হবে।
বিদেশি গৃহস্থালি থেকে চোখ ফেরানোর চেষ্টা চালিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সেটি করেছেন দেশীয় গৃহস্থালি কাজের জন্য দৈনন্দিন ব্যবহার্য পণ্য বিশেষ করে ব্লেন্ডার, জুসার, মিক্সার, গ্রাইন্ডার, ইলেকট্রনিক কেটলি, রাইস কুকার, মাল্টি কুকার পেসার কুকারে স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ছাড় দেয়া হয়েছে। একই সুবিধা দেওয়া হয়েছে ওয়াশিং মেশিন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেকট্রনিক ওভেনের স্থানীয় উৎপাদন পর্যায়ে। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের কর আয়ের সীমা ৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ লাখ টাকা করা হয়েছে।
মুড়ি উৎপাদন এবং তাজা ফল ব্যবসায় ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়েছে। সুবিধা পাবেন স্থানীয় মোবাইল, কৃষি উপকরণ যন্ত্রাংশ ও হালকা প্রকৌশলী শিল্পের মূলধনী যন্ত্রপাতি উৎপানে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা পাচ্ছে। এসব পণ্যের দাম আগামীতে কমবে। এছাড়া ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ উৎপাদনমুখী ৬ খাতে। পাশাপাশি ১০ বছরের কর অবকাশের সুবিধা দেওয়া হয়েছে মেইড ইন বাংলাদেশে।
এছাড়া ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত স্যানিটারি ন্যাপকিন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, পিপি, ভ্যাকসিন আমদানি, উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়েও। এছাড়া অটিজম সেবার কার্যক্রম এবং ও মেডিটেশন সেবার ওপর ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সব ধরনের তামাক পণ্যের মূল্য বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে দু’লাখ টাকা বা তার নিচে সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন লাগবে না এমন বিধানও রাখা হয়েছে। বিকাশ-নগদসহ মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা করপোরেট কর বাড়ানো হয়েছে। পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি ব্যবসায়িক লেনদেনে ব্যাংকে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আর গাড়ি উৎপাদনে ২০ বছরের কর অবকাশ সুবিধাও দেওয়া হয়েছে।
আগামী বাজেটে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। ঘাটতি (অনুদানসহ) ২ লাখ ১১ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এটি মোট জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ। তবে সামাজিক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় বৃদ্ধির যে বাস্তবতা তৈরি হয়েছে, সেই চাহিদা পূরণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
তাদের মতে, রাজস্ব বাড়ানো না গেলে সরকারের পক্ষে বড় ধরনের প্রণোদনা দেওয়া সম্ভব নয়। আর সামগ্রিক কর ব্যবস্থার সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানো না গেলে কর আহরণ বৃদ্ধি করাও দুরূহ। এখন যে হারে কর সংগৃহীত হচ্ছে, তা দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কর খাত থেকে আসবে ৩ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা, কর ব্যতীত প্রাপ্তি হচ্ছে ৪৩ হাজার কোটি টাকা। তবে করের টাকা দুটি খাত থেকে আদায় করা হয়। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা এবং এনবিআরবহির্ভূত কর ১৬ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া আগামী বছর বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।
এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের মোট ব্যয়ের মধ্যে পরিচালন ব্যয় ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫শ কোটি টাকা, উন্নয়ন ব্যয় ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয়ের মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার হচ্ছে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮ কোটি টাকা। এবারই প্রথম জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ ধরে ঘাটতি বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এ ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়া হবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক খাত থেকে নেওয়া হবে ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। তবে অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৩২ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা। পাশাপাশি ঋণ করার কারণে বিপরীতে সুদ পরিশোধ করতে হয়। এ জন্য আগামী বছরে সুদ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৬৭ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে প্রবাসীদের আয় বৈধ পথে পাঠানোকে উৎসাহিত করতে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা সুবিধা বহাল রাখার পাশাপাশি ব্যাংকে চ্যানেলে রেমিটেন্স বাড়াতে বিশেষ প্যাকেজ কর্মসূচি চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানো হচ্ছে। আরও এক হাজার ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী বছরেও মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় অগ্রাধিকারে রয়েছে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন। এরপর পর্যায়ে অগ্রাধিকার খাতগুলো হচ্ছে- কৃষি, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নসহ সার্বিক মানবসম্পদ উন্নয়ন, পল্লি ও কর্মসৃজন। এরপর রয়েছে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ও নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে স্বল্প ও বিনা মূল্যে খাদ্য বিতরণ।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আগামী অর্থবছরেও ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি গবেষণায় ১০০ কোটি টাকার তহবিল রাখা হয়েছে। গত বছরেও এ পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কৃষি খাতে সরবরাহ চেইনকে প্রভাবিত করতে কৃষি ও অকৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ১৩০টি গ্রোথ সেন্টার তথা হাটবাজার উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এবারই প্রথম দেশের ১৫০টি উপজেলার সব বয়স্কজন ও বিধবা নারীকে ভাতা দেয়া হবে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আওতা বাড়লেও তাদের ভাতার পরিমাণ বাড়েনি। ভাতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। জুলাই এটি কার্যকর হবে। সবমিলে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বোচ্চ বরাদ্দ জনপ্রশাসনে। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি এবং তৃতীয় অবস্থানে পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে।