নওগাঁর আত্রাই উপজেলার নদ-নদী ও খাল বিল বন্যায় ডুবে যাওয়ায় ঐতিহ্যবাহী বিশা ইউনিয়নের সমসপাড়া হাটে নৌকা বিক্রির ধুম পড়েছে। এলাকার পানি বন্দী গ্রাম গুলোর মানুষের চলাচল এবং অবসর সময়ে বিলে মাছ ধরার জন্য নৌকার কদর অনেক বেড়ে গেছে তাই এলাকার বিভিন্ন হাটে  নৌকা বিক্রয়ের ধুম পড়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সমসপাড়া সপ্তাহে শুক্রবার-সোমবার এই দু’দিন হাটবারে বিত্রি হচ্ছে শত শত নৌকা।

জানা যায়,গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লাগাতর বৃষ্টির হওয়ায় এবং উজান থেকে আসা পানির ঢলে আত্রাই নদী ফুঁসে উঠেছে। সেই সাথে বিভিন্ন স্লুইচগেট দিয়ে বন্যার পানি নদী,খাল, বিলে প্রবেশ করায় এবং রক্তদহ বিলের পানিতে উপজেলার পূর্বাঞ্চলের ও পশ্চিম অঞ্চলের মাঠ গুলো এখন পানিতে থৈ থৈ করছে।কয়েক দিনের প্রবল বৃষ্টির হওয়ায় উপজেলার বিশা,কালিকাপুর,হাটকালুপাড়া, পাঁচুপুর,ভোঁপাড়া ইউনিয়নের অধশতাধিক গ্রামের মানষ এখন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার মানুষদের চলাচলের একমাত্র বাহন হিসেবে নৌকার বিকল্প নেই।

এ ছাড়া খাল বিল,নদী,নালা,ফসলের মাঠ বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় কৃষকদের চলছে অবসর সময় পার করার পালা। তাই এ অবসর সময়ে উন্মুক্ত মাঠে মাছ শিকারের জন্য নৌকা ক্রয় করছেন। এজন্য বিভিন্ন হাট বাজারে বেড়েছে নৌকার কদর।এদিকে নৌকা ক্রয়ে একদিকে সুফল পাচ্ছেন  এলাকার পানি বন্দী মানুষরা।অপর দিকে নৌকা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অনেক নৌকা তৈরির কারিগররা।এলাকার নৌকা তৈরির কারিগররা শুস্ক মৌসুমে কাজের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেছেন তাদের এই বন্যার সময়ে এখন তারা কর্মে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্যতা।

হাঁসি ফুটেছে এসব নৌকা তৈরির কারিগর পরিবারের।সমসপাড়া হাটে নৌকা বিক্রয় করতে আসা উপজেলার পারমোহনঘোষ গ্রামের আসাদুজ্জামান, নাজিমুদ্দিন,আব্দুল লতিফসহ অনেকে বলেন, আমরা কৃষক মানুষ।বর্ষায় আমাদের মাঠ ডুবে যাওয়ায় আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি।বতমানে বিভিন্ন গ্রামে নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা নৌকা বিক্রির পেশায় নিয়োজিত হয়েছি।সপ্তাহে দু,দিন শুক্রবার ও সোমবার সমসপাড়া হাট।

বর্ষাকালে জীবিকা নির্বাহের জন্য এ হাটে আমরা নৌকা বিক্রয় করে থাকি। বর্তমানে কাঠ-বাঁশ,লোহারদাম বেশি এবং মিস্ত্রির মজুরীও বেশি হওয়ায় খুব বেশি লাভ না হলেও যা হয় তা দিয়ে সংসারের হাট-বাজার করা চলে। শুধু আত্রাই নয় পার্শ্ববতী রাণীনগর, নাটোরের সিংড়া এবং চলনবিল এলাকার লোকজনও এ হাট থেকে আমাদের নৌকা ক্রয় করেন। নৌকা ক্রেতা খরসতি গ্রামের শাহিন বলেন, আমরা র্বষা মৌসুমে মাঠে মাছ শিকার ও চলাচলের জন্য নৌকা ক্রয় করে থাকি।

এসময় নৌকাই আমাদের একমাত্র বাহন।সমসপাড়া হাটের ইজারাদা আব্দুল মান্নান মোল্ল্যার প্রতিনিধি মোঃ সোহেল রানা জানান, বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও স্বাভাবিক ভাবেই নৌকা প্রতি এক শত থেকে দেড় শত টাকা করে খাজনা আদায় করা হয়।বিগত বছরের তুলনায় খাজনার পরিমান বাড়ানো হয় নাই।এই ঐতিহ্যবাহি নৌকার হাট (সমসপাড়া হাট) সরকারী ডাক বৃদ্ধি পেলেও ক্রেতা বিক্রেতাদের স্বার্থে বিগত বছরের ন্যায় খাজনা আদায় করা হচ্ছে।

আপনার মতামত দিন